ক্ষেপণাস্ত্রের উপাদান বহনকারী সন্দেহভাজন দ্বিতীয় ইরানি জাহাজ চীন ছেড়েছে

পশ্চিমা সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন মোতাবেক, চীন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রপেল্যান্টের উপকরণ আমদানি সংক্রান্ত একটি প্রকল্পের অংশ হিসেবে দ্বিতীয় ইরানি জাহাজ বিশাল পণ্য নিয়ে সে দেশের অভিমুখে অগ্রসর হচ্ছে, ভিওএ-র বিশ্লেষণে এমনটা জানা গেছে। জাহাজ ট্র্যাক করে এমন একাধিক ওয়েবসাইট দেখাচ্ছে, ইরানের পতাকা সম্বলিত পণ্যবাহী জাহাজ ‘জয়রন’ সোমবার চীন থেকে রওনা হয়েছে; একাধিক সংবাদ প্রতিবেদনের একটিতে উল্লেখ করা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের এক মাস পরে এই জাহাজ ছাড়লো।

জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে দ্য ফিনান্সিয়াল টাইমস, দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল ও সিএনএনের নিবন্ধে বলা হয়েছিল, ইরানের দুটি পণ্যবাহী জাহাজের একটি হল জয়রন; চীন থেকে ১ হাজার মেট্রিক টন সোডিয়াম পারক্লোরেট আমদানি করতে এই জাহাজগুলি ব্যবহার করছে তেহরান। তিনটি সংবাদ সংস্থা অজ্ঞাতনামা একাধিক পশ্চিমা গোয়েন্দা সূত্রকে উদ্ধৃতি করে বলেছে, ২৬০টি মাঝারি পাল্লার ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করতে এই কথিত চালান হওয়া পণ্যকে পর্যাপ্ত অ্যামোনিয়াম পারক্লোরেটে রূপান্তরিত করা হতে পারে যা প্রপেল্যান্টের ঘন বা জমাটবদ্ধ জ্বালানির একটি প্রধান উপাদান।

সংবাদ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ইরানের আরেকটি পণ্যবাহী জাহাজের নাম ‘গলবন’; এটি মাত্র ১৯ দিনে চীনের পূর্বাঞ্চল থেকে ইরানের বন্দর আব্বাসে ১৩ ফেব্রুয়ারিতে চলে এসেছে। সফরকালে এটি দুইদিন দক্ষিণ চীনের ঝুনহাই গাওলান বন্দরে থামে এবং ইরানকে এক অজ্ঞাতনামা কার্গো সরবরাহ করে বলে জানিয়েছে জাহাজ ট্র্যাককারী ওয়েবসাইট মেরিনট্রাফিক।

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি দফতর গলবন ও জয়রন উভয় জাহাজের উপরই নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে কেননা এই জাহাজগুলি ইসলামি প্রজাতান্ত্রিক ইরানের শিপিং লাইন (রাষ্ট্রায়ত্ত) দ্বারা পরিচালিত এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের বক্তব্য অনুযায়ী, এই শিপিং লাইন “ইরানের অস্ত্র বৃদ্ধির পছন্দসই পথ ও সরঞ্জাম সংগ্রহের মাধ্যম,” তাই ইরানের এই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার উপরই নিষেধাজ্ঞা চাপানো রয়েছে।

ভিওএ যোগাযোগ করলেও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর চীন থেকে জয়রনের রওনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। নিউইয়র্কে ইরানের জাতিসংঘ মিশনকে মঙ্গলবার এই বিষয়ে মন্তব্য করার জন্য ভিওএ-র পক্ষ থেকে ই-মেইল করা হয়, তবে তারাও কোনও জবাব দেয়নি।

গত মাসে পররাষ্ট্র দফতর ভিওএ-কে বলেছে, চীন থেকে সোডিয়াম পারক্লোরেট আমদানি করতে গলবন ও জয়রনের কথিত ব্যবহার বিষয়ে দ্য ফিনান্সিয়াল টাইমস ও ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের জানুয়ারির একাধিক সংবাদ প্রতিবেদন সম্পর্কে তারা ওয়াকিবহাল।

একজন মুখপাত্র বলেছেন, গোয়েন্দা বিষয় নিয়ে পররাষ্ট্র দফতর মন্তব্য করে না, তবে “ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র বা অন্যান্য অস্ত্র কর্মসূচির জন্য লাভজনক উপাদান, সরঞ্জাম ও প্রযুক্তির বৃদ্ধি ঠেকাতে তারা সজাগ রয়েছে এবং নিষেধাজ্ঞা চাপানোর মাধ্যমে ইরানকে জবাবদিহি করতে বাধ্য করে চলেছে।”

সূত্র: ভয়েজ অব আমেরিকা

Related Articles

পুর্নজন্ম কি বৈজ্ঞানিক ভাবে সম্ভব? — একটি বিশ্লেষণাত্মক প্রবন্ধ

মানব ইতিহাস জুড়ে মানুষের মৃত্যু ও মৃত্যুর পর কী হয়—এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য বহু ধর্ম, দর্শন ও আধ্যাত্মিকতা চেষ্টা করেছে। অতীতে জীবনের পরের ধাপে…

বারবার অভিযানের পরও উড়াল গ্যাস বন্ধ হয়নি, বাকাইল যেন বিস্ফোরণের অপেক্ষায়

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মজলিশপুর ইউনিয়নের বাকাইল গ্রামে কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে গাছের উপর গ্যাসের পাইপ ঝুলছে। এ কারণে গ্রামটি এখন উড়াল গ্যাসের গ্রাম হিসেবে বেশি পরিচিত।…

কর্মকর্তারা বিশ্বরোড়ে আছেন কিনা দেখতে ভিডিও কল দিলেন সড়ক উপদেষ্টা

কর্মকর্তারা সড়কে আছেন কিনা তা নিশ্চিত হতে ভিডিও কল দেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ…

ওয়েব ৩.০ : বাংলাদেশের অনলাইন ব্যবহারকারীদের জন্য নতুন দিগন্ত

লিটন হোসাইন জিহাদ: ইন্টারনেটে এক সময় মানুষ পড়ার জন্য তথ্য খুজতো। পরে সবাই লেখা ও মত প্রকাশের সুযোগ পায়, ফেসবুক বা ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্ম তৈরি…

জুলাই বিপ্লবের সাদিম কায়েম এর যে কাহিনী সবার জানা প্রয়োজন

জুলাই বিপ্লব নিয়ে ইয়েনি সাফাককে (তুরস্কের গণমাধ্যম) একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন জুলাই বিপ্লবের নেতা সাদিক কায়েম। তিনি ব্যাখ্যা করছেন, কীভাবে বাংলাদেশের জুলাই বিপ্লব বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে…

Responses