দেশের নদীগুলোর সঠিক সংখ্যা নির্ধারণের জন্য আগামী দুই মাসের মধ্যে একটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। আজ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, পানি উন্নয়ন বোর্ড, এবং জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তাদের এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সরকারি সূত্র অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৭০০ থেকে ৮০০ নদী রয়েছে বলে বিভিন্ন পরিসংখ্যানে উল্লেখ করা হয়। তবে ভিন্ন ভিন্ন তথ্যের কারণে নদীর প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এ সমস্যার সমাধানে একটি সুনির্দিষ্ট ও সঠিক তালিকা প্রণয়নের লক্ষ্যে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। দুই মাসের মধ্যে এই তালিকা চূড়ান্ত করে জমা দেওয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে, যাতে নদী সংরক্ষণ, ব্যবস্থাপনা এবং ভবিষ্যৎ উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা সম্ভব হয়।
বৈঠকে আলোচিত হয়েছে, দেশের নদীগুলোর সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করা না হলে, নদীভিত্তিক বিভিন্ন প্রকল্প, যেমন সেচ ব্যবস্থা, বন্যা প্রতিরোধ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করা কঠিন হয়ে পড়বে। এই জন্য আধুনিক প্রযুক্তি, স্যাটেলাইট চিত্র এবং মাঠ পর্যায়ের জরিপের মাধ্যমে নদীগুলোর সংখ্যা নির্ধারণ করার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
২ মাসের মধ্যে দেশের নদীর সঠিক সংখ্যা চূড়ান্ত করার নির্দেশ
পরিবেশ ও নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, “নদীগুলো আমাদের পরিবেশ ও অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। তাদের সঠিক সংখ্যা ও বর্তমান অবস্থা নির্ধারণ করা হলে নদী সংরক্ষণে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা সহজ হবে। আমরা আধুনিক প্রযুক্তি এবং স্থানীয় জ্ঞান ব্যবহার করে এই কাজটি দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করব।”
বৈঠকে আরও জানানো হয়, প্রাথমিকভাবে ২ মাসের মধ্যে দেশের নদীগুলোর মানচিত্র তৈরি করা হবে। এরপর নদীগুলোর শারীরিক অবস্থা, জলপ্রবাহ, দখল ও দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হবে। স্থানীয় প্রশাসন, নদী বিশেষজ্ঞ, পরিবেশবিদ ও স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করে একটি কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে নদী দখল, দূষণ এবং প্রাকৃতিক জলপ্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির সমস্যাগুলো সমাধানের পথে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। দেশব্যাপী নদী রক্ষা আন্দোলন এবং বিভিন্ন সংগঠন এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে, কারণ এটি নদীভিত্তিক টেকসই উন্নয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে