পূণ্য লাভের আশায় বগুড়ায় হাজারো ভক্ত জগন্নাথ দেবের রথের রশি টেনে নিয়ে মন্দিরের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। কিন্তু আনন্দের এই রথযাত্রা মুহূর্তেই পরিণত হলো শবযাত্রায়। রথযাত্রায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩৫ জনেরও বেশি । তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়েছে।
রোববার ৭ জুলাইবিকেলে শহরের সেউজগাড়ী আমতলা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পৌরাণিক সাজের মাধ্যমে রোববার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বগুড়া শহরের সেউজগাড়ী এলাকার ইসকন মন্দির থেকে শিবমন্দিরের উদ্দেশ্যে শুরু হয় রথযাত্রা। সেউজগাড়ী আমতলায় পৌঁছালে রথের মাস্তুল বিদ্যুতের ১১ হাজার ভোল্টের তারের সঙ্গে লেগে যায়। এতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে আগুন ধরে যায় গাড়িতে। সড়কে ছিটকে পড়ে হতাহত হন অনেকে। আহত হন ৪০ জন। আহতদের জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে ৫ জনকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
শাস্ত্রমতে, ভক্তদের দর্শন দানের উদ্দেশ্যে জগন্নাথ দেব প্রতি বছর এই তিথিতে আপন আলয় থেকে রথে চড়ে নগর পরিভ্রমণ করে মাসির বাড়ি বেড়াতে যান। সাত দিন পর ১৬ জুলাই উল্টো রথযাত্রার মাধ্যমে আপন আলয়ে ফিরবেন জগন্নাথ দেব।
রথযাত্রায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইমরুল কায়েসকে প্রধান করে পুলিশ, নেসকো, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল সার্জনের প্রতিনিধির সমন্বয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
এছাড়া রথযাত্রায় ৫ জনের মরদেহ সৎকারের জন্য জনপ্রতি ২৫ হাজার টাকার অনুদান দেয়া হয়েছে। নিহতরা হলেন: রনজিতা, নরেশ মহন্ত , আতসী রানী , অলক কুমার ও জলি রানী । তাদের মরদেহ আজ সোমবার ৮ জুলাই নিজ নিজ এলাকায় সৎকার করা হবে। নিহত সবাই বগুড়া শহর ও বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা।
বগুড়ার জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আহতদের চিকিৎসায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে৷ এছাড়া দুর্ঘটনা তদন্তে সোমবার থেকে তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করবে।’
চটপপ