লিটন হোসাইন জিহাদ: কোনো ডাক্তার কবিরাজ এ রোগ সারাতে পারে না। হোমিওপ্যাথি কিংবা এলোপ্যাথি ঔষধেও কাজ করে না। যতো আয়ুর্ব্যাধিক কিংবা প্রাকৃতিক হোক সারা জীবনে সেবনেও এ রোগ সারে না। মদ কিংবা হিরোইন সামান্য সময়ের জন্য অচেতন করে রাখলেও দিন শেষে এ রোগে আক্রান্ত হবেই। রোগটির নাম “মায়া”। মায়া রোগটি প্রেম কিংবা ভালোবাসার নামে প্রথমে মন ও মগজে আক্রমণ করে স্থায়ী বসতি হয় হৃদয়ে। একবার আক্রান্ত হলে মৃত্যু অবধি ঠেনে নিয়ে যায়। মায়া এমন এক রোগ একবার যাকে ধরেছে বাহির ঠিক থাকলে ভিতরে ঘুন পোকার মতো সব ঝাঝড়া বানিয়ে ফেলে। এভাবে কতোজন যে জীবনের যাত্রা, মধ্য পথে থামিয়ে দিয়েছে তার হিসাব হয়তো কারো জানা নেই তবে সংখ্যাটা নেহাত কম নয়।
মায়ার সাগরে ডুবতে ডুবতে আজ ভেসে উঠল মায়ান।
চন্ডিদাসের মতো দীর্ঘ অপেক্ষার পর আজ রিয়া মায়ানকে অবশেষে বললো, “সে তার মায়ায় পড়েছে, আল্লাহ চাইলে মায়ানে ঘাটে বাধবে তার তরী।”
এই শব্দগুলি উচ্চারিত হওয়ার সাথে সাথে মায়ানের মনে এমন এক শান্তির অনুভূতি এলো, যেন দীর্ঘকাল ধরে চলা এক ভীষণ ঝড় শেষে বনাঞ্চল শান্ত ও স্নিগ্ধ হয়েছে। চারিদিকে যেন এক অপরূপ শান্তি বিরাজ করছে, প্রকৃতির প্রতিটি কণা নতুন করে প্রাণ ফিরে পেয়েছে। ঝড় শেষে যেমন বাতাসে এক ধরণের নির্মলতা আসে, তেমনই সমস্ত উদ্বেগ ও আশঙ্কা বিদায় নিয়েছে, আর প্রতিটি মুহূর্ত এক নতুন আশার আলোয় উদ্ভাসিত হয়েছে।
এই মুহূর্তে প্রকৃতি তার সমস্ত সৌন্দর্য দিয়ে চারপাশে এক শান্তির বলয় গড়ে তুলেছে। পাখির কূজন, গাছের পাতায় বাতাসের মৃদু স্পর্শ, সবকিছুই এক সুরেলা সঙ্গীতের মতো প্রতিধ্বনিত হচ্ছে হৃদয়ে। এমন এক পরিপূর্ণতার মুহূর্তে প্রকৃতির মতোই হৃদয়ও এখন প্রশান্ত এবং পূর্ণ।
অপেক্ষার শেষে এই স্বীকৃতি জীবনের সব চাওয়া-পাওয়ার সীমাকে ছাড়িয়ে গেছে। জীবনের সমস্ত ব্যথা, কষ্ট, অপেক্ষা আজ এক নিমেষে মিলিয়ে গেছে এই একটি বাক্যের মধ্যে। সমস্ত জগৎ এক নতুন দিগন্ত পেয়েছে, যেখানে শুধুই শান্তি, আনন্দ, এবং প্রেমের বিরাজমান।
সব ঝড়, সব কষ্ট শেষে এই মুহূর্তটি যেন সকল বেদনার প্রতিশোধ নিয়ে এসেছে, যা মায়ানকে এক নতুন জীবন দান করেছে।
মায়ান অজু করে শোকরিয়া নামায আদায় করে নিল। দুই হাত তুলে বললো,প্রভু গো
দুই হৃদয়ের মাঝে এক অব্যক্ত বন্ধন তৈরি করে দাও, যার পবিত্র বন্ধন তোমার কাছাকাছি পৌছে দেবে।
চলবে