যে স্থানে মাসের অষ্টম দিন সবাইকে হাসতে হয়

পৃথিবীর একেক দেশে একেক রকম নিয়ম। কোনো দেশে ব্লু জিন্স পরা নিষেধ, তো কোনো দেশে সস খাওয়া নিষেধ। অদ্ভুত শোনালেও এমনই বিধি-নিষেধ আছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। আপনার আমার কাছে এটি খুব অযৌক্তিক মনে হলেও এর আসলে নির্দিষ্ট কারণ আছে বটে।

নীল জিন্স লাল লিপস্টিক পরা নিষেধ :  এই যেমন উত্তর কোরিয়াতে ছেলেদের নীল জিন্স পরাও নিষিদ্ধ। সে দেশের শাসকের দাবি, নীল রং তাদের আমেরিকার কথা মনে করিয়ে দেয়, তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নারীদের লাল লিপস্টিপ পরাও বারণ। সেখানে লাল লিপস্টিক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা শুধু ফ্যাশন নিয়ম নয়। এই আইনটি স্বৈরশাসকের আদর্শের গভীরে প্রোথিত। আসলে লাল রং প্রায়শই মুক্তির প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। অন্যদিকে এটা বিশ্বাস করা হয় যে লাল লিপস্টিক পরা নারীদের আকর্ষণীয় দেখায় যা দেশে নৈতিক অবক্ষয় ঘটাতে পারে।

হাসি বাধ্যতামূলক :  জাপানের ইয়ামাগাটা প্রিফেকচার নামক এক স্থানীয় সরকার এই আইনটি করেছেন। মূলত সেখানকার বাসিন্দাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ভাল করার জন্য করা হয়েছিল। আইনে দিনে অন্তত একবার হাসার কথা বলা আছে। এই নতুন আইনটি ইয়ামাগাটা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছিল। সেখানে বলা আছে হাসির সঙ্গে সুস্বাস্থ্যের সরাসরি সম্পর্ক আছে। প্রতি মাসের অষ্টম দিনটিকে ‘হাসির মাধ্যমে বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যের উন্নতি করার’ দিন হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে।

এই উদ্যোগটি ইয়ামাগাটা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের গবেষণার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে, গবেষণা বলছে হাসি স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং মানুষের আয়ু বাড়াতেও সাহায্য করে। জার্নাল অব এপিডেমিওলজিতে প্রকাশিত একটি ২০২০ সালের গবেষণায় ৪০ বছরের বেশি বয়সী ১৭ হাজার ১৫২ জন ব্যক্তির উপর বেশ কয়েকটি বিষয় পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। দেখা গেছে যে হাসির কম ফ্রিকোয়েন্সি উচ্চতর মৃত্যুর হার এবং কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঘটনাগুলোর সঙ্গে যুক্ত ছিল।

See also  সবচেয়ে কম আয়ু যে প্রাণির

গবেষকরা হাসিকে জীবন উপভোগ, ইতিবাচক মনস্তাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং উচ্চতর দক্ষতা, বিশ্বাস, খোলামেলাতা এবং বিবেকবানতার সঙ্গেও যুক্ত করা হয়েছে। তবে কেউ যদি নির্দিষ্ট দিনে হাসতে না পারেন তাহলে তার কোনো জরিমানা হবে না। কারণ অনেকে অসুস্থতার কারণে ওই দিন হাসতে নাও পারেন।

সাঁতারের পোশাকে গান গাওয়া নিষেধ :  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা রাজ্য তার সুন্দর সমুদ্র সৈকতের জন্য বিখ্যাত। এখানে সাঁতারের পোশাকে গান গাওয়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। একটি অস্বাভাবিক আইনটি লোকেদের সাঁতারের পোশাকে গান গাইতে নিষেধ করে। অন্যদের শান্তি যেন ব্যহত না হয়, তার জন্যই এই আইন আনা হয়েছিল।

চেরি পাইয়ের উপর আইসক্রিম খাওয়া নিষেধ : কানসাস, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রধান কৃষি রাজ্য। সেখানেই চেরি পাই সম্পর্কিত একটি অদ্ভুত আইন রয়েছে। আইসক্রিমের স্কুপের সঙ্গে চেরি পাই পরিবেশন করা নিষিদ্ধ। এই আইনটি সম্ভবত ১৮০০ দশকে প্রণীত হয়েছিল। সেই সময়ে আইসক্রিমের সঙ্গে মিষ্টি খাওয়াকে নৈতিকভাবে ভুল বলে মনে করা হত।

চুইংগাম নিষিদ্ধ : সিঙ্গাপুরে চুইংগাম নিষিদ্ধ। সেখানে ১৯৯২ সালে এক ব্যক্তি একটি গাড়িতে চুইংগাম আটকে দেওয়ায় কয়েক ঘণ্টা বিঘ্নিত হয়েছিল পরিবহন পরিষেবা। দুর্ভোগে পড়তে হয়েছিল জনগণকে। তারপর থেকে চুইংগাম নিষিদ্ধ এ দেশে।