নারায়ণগঞ্জে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ ৩০ আহত

নারায়ণগঞ্জ শহরে কোটা আন্দোলনকারী ও পুলিশের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছে। আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ একের পর এক টিয়ার শেল ও রবার বুলেট নিক্ষেপ করছে। উভয় পক্ষের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৩০ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

কোটা সংস্কারের দাবিতে বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে আন্দোলনকারী কয়েক হাজার যুবক শহরের প্রধান সড়কগুলোতে দফায় দফায় মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করতে থাকে।

এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেয়। দুপুর সাড়ে ১২টায় নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কে সাধু পৌলের গীর্জার সামনে অতর্কিতভাবে পুলিশের দুইটি গাড়ি ভাঙচুর করে আন্দোলনকারীরা। এ সময় পুলিশ তাদের ধাওয়া দিলে সড়কের সামনে, পেছনে ও দুই পাশের অন্তত ৫-৬টি গলি থেকে একযোগে পুলিশের ওপর ইট পাটকেল ছুঁড়তে থাকে আন্দোলনকারীরা।

একপর্যায়ে চতুর্দিক থেকে পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের ঘিরে ফেলে আন্দোলনকারী কয়েক হাজার যুবক। পুলিশের সঙ্গে তাদের দফায় দফায় ধাওয়া-পালটা ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলতে থাকলে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় নারায়ণগঞ্জ শহর। সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে এবং আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দুপুর দুইটা পর্যন্ত টানা দেড় ঘণ্টা ধরে দুপক্ষে দফায় দফায় ধাওয়া-পালটা ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলছে।

এর আগে কোটা সংস্কারের দাবিতে সকাল ১০টা থেকে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে আন্দোলনকারীদের অবরোধ ও বিক্ষোভ শুরু হয়। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারীরা নগরীর চাষাঢ়ায় জড়ো হতে থাকে। পরে মিছিলে মিছিলে উত্তাল হয়ে পড়ে শহরের প্রধান সড়ক বঙ্গবন্ধু রোড। এরপর আন্দোলনকারীরা নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশের পর নগরীর দুই নম্বর রেল গেট এলাকায় অবস্থান নিয়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটের রেললাইন অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। এছাড়া ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের জালকুঁড়ি এলাকায় বিজিবি ক্যাম্পের সামনে অবরোধ সৃষ্টি করে বিক্ষোভ করে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। এ সময় সেখানে সতর্ক অবস্থানে থাকে বিজিবির ব্যাটালিয়ন সদস্যরা।

See also  চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদ

একই সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল এলাকায় এবং নারায়ণগঞ্জ-আদমজী সড়কের সিদ্ধিরগঞ্জপুল এলাকায় অবরোধ সৃষ্টি করে বিক্ষোভ করে কোটা আন্দোলনকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এসব পয়েন্টে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা সেখানে অবস্থান নেয়। তবে নারায়ণগঞ্জ শহর ছাড়া জেলার আর কোথাও কোনো ধরণের সংঘর্ষ, সহিংসতা বা অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।