
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সারাদেশে সহিংসতার জেরে গেল ১৯ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা কারফিউ জারি করে সরকার। বন্ধ হয় ইন্টারনেট সেবাও। যদিও পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। শিথিল করা হয়েছে কারফিউ। সীমিত পরিসরে চালু হয়েছে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাও।
তারপরও দেশের মানুষের মধ্যে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। খুব বেশি প্রয়োজন কিংবা কাজের তাগিদ না থাকলে ঘর থেকে বের হচ্ছে না বেশির ভাগ মানুষ।
শোবিজের তারকাশিল্পীরাও এখন অনেকটাই ঘরমুখো। চলমান পরিস্থিতিতে বন্ধ আছে শুটিং। বিভিন্ন শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই সময়টা তারা পার করছেন পরিবারের সঙ্গে। ক’জন তারকাশিল্পীদের কথা নিয়েই আজকের এই আয়োজন।
ফজলুর রহমান বাবু
গত কয়েকটি দিন খুব অস্থির সময় কাটিয়েছি। চলমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ ছিলাম। অপেক্ষা করছিলাম সুন্দর সময়ের। বর্তমানে দেশে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে আসছে। আশা করি, সবকিছু আগের মতো পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। গেল কয়েকটি দিন একটিবারের জন্যও বাসা থেকে বের হইনি। স্ত্রী ও দুই কন্যার সঙ্গে সময় কাটিয়েছি। গল্প করেছি, বই পড়েছি, টেলিভিশন দেখেছি- এভাবেই সময়গুলো পার করেছি। আপাতত শুটিং নিয়ে ভাবছি না। সবকিছু ঠিক হলে পরেই শুটিংয়ে ফিরব।
আদিল হোসেন নোবেল
গেল কয়েকদিন ধরে আসলে অন্যরকম সময় কেটেছে। এরকম সময় কিংবা পরিবেশ আমরা কেউই আশা করিনি। দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে অনেক টেনশনের মধ্যে ছিলাম। টেলিভিশনের নিউজ দেখলেই মন খারাপ হয়ে যেত।
এমন পরিবেশের মধ্যেও আমাকে অফিসের জন্য কাজ করতে হয়েছে। আমার সন্তানরা বিদেশে পড়ালেখা করছে। ওদের জন্য এক ধরনের মায়া কাজ করেছে। সত্যি কথা বলতে চাই, সবকিছু স্বাভাবিক হোক। লাখো শহীদের বিনিময়ে এই বাংলাদেশ পেয়েছি, দেশটি সুন্দর থাকুক। কেননা, সবার আগে দেশ।
চঞ্চল চৌধুরী
সারা বছর শুটিং নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হয়। তাই ঠিকমত পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো সম্ভব হয় না। অবশ্য মাঝে মধ্যে কিছুটা সময় বের করি পরিবারের জন্য। তবে এবার শুটিং না থাকার কারণে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর দারুণ একটা সুযোগ হয়েছে।
আপাতত ঘরেই আছি। ভিন্নভাবে সময় কাটছে। প্রচুর টেলিভিশন দেখছি। গত সাত বছরে এত সময় ধরে টেলিভিশন দেখা হয়নি। পাশাপাশি স্ত্রী-ছেলেসহ তিনজন মিলে সময় কাটিয়েছি।
গ্রামের বাড়িতে মা আছেন। মায়ের শরীর তেমন ভালো না। প্রতিদিন মায়ের সঙ্গে কথা বলছি। নতুন অভিজ্ঞতা হয়েছে গত কয়েকদিনে। সবকিছু আবার স্বাভাবিক হউক, এই কামনাই করছি।
মোশাররফ করিম
এমন পরিস্থিতির মধ্যে তো শুটিং বন্ধ। এখন বাসাতেই আছি। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছি। এর মধ্যে বই পড়ে, টিভি দেখেও সময় পার করছি। কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরুর দিকে অনেকটা ভয়ে ছিলাম। বলা যায়, বেশ উৎকণ্ঠার মধ্যেই ছিলাম।
এই ক’দিনে জীবনকে নতুনভাবে উপলব্ধি করেছি। আশা করি, সবকিছু আবার ঠিক হয়ে যাবে। তবে মনে কিছু দাগ থেকে যাবে। যা কখনও ভুলে যাওয়ার না।
সিয়াম আহমেদ
অনেকগুলো কাজ জমে আছে। তবে সবকিছু স্বাভাবিক হওয়ার পরই শুটিং নিয়ে চিন্তা করব। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আগে বলতে পারছি না কবে নাগাদ শুটিংয়ে ফিরব।
দেশের এরকম অবস্থায় অনেক টেনশন কাজ করছে। ভাবছি কখন সবকিছু ঠিক হবে, আর যেন কেউ মারা না যায়। যারা অতি দরিদ্র মানুষ, তাদের জন্যও টেনশন হচ্ছে। তারা কীভাবে জীবনযাপন করবে।
লাইটম্যান, শুটিংয়ের ছোট-খাট কাজ করেন যারা, তারা কীভাবে চলবেন? গত কয়েকটি দিন অবসরে ছিলাম- এমনটা বলব না। প্রতিটি দিন কেটেছে টেনশনে। আশা করি, দ্রুতই সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
আবদুন নূর সজল
চলমান পরিস্থিতির কারণে আপাতত শুটিং বন্ধ আছে। সময় কাটছে বাসাতেই। আমার বাসা ধানমন্ডিতে। শুরুতে বাসার সামনের রাস্তায় অনেক ঝামেলা হয়েছে। সেজন্য ভয়ও কাজ করেছে। এখন ভয় কেটে গেছে।
গত কয়েকটি দিন বই পড়ে সময় কাটিয়েছি। আমাকে গোয়েন্দা উপন্যাস টানে। নতুন করে ফেলুদা পড়েছি। তাছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ছাড়াও যে সুন্দর করে সময় কাটানো যায়, তা বই পড়ে বুঝেছি।