ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় পোলিও মহামারি ঘোষণা করা হয়েছে। ইসরাইলি বাহিনীর বর্বর সামরিক আগ্রাসনের কারণে এই স্বাস্থ্য সংকটের জন্য দায়ী করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
সোমবার (২৯ জুলাই) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় টেলিগ্রামে দেয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই পরিস্থিতি গাজা ও প্রতিবেশী দেশগুলো মানুষের জন্যও বড় স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করেছে।
হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নতুন এই পোলিও মহামারি বিশ্বব্যাপী পোলিও নির্মূল কর্মসূচিতে বাধা সৃষ্টি করছে। খাবার পানি ও ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধির অভাব, ক্ষতিগ্রস্ত পয়ঃনিষ্কাশন নেটওয়ার্ক এবং টন টন ময়লা অপসারণের জন্য ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধ করতে অবিলম্বে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়েছে।
গত সপ্তাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানায়, যুদ্ধ-বিধ্বস্ত গাজায় ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্য এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থা। উপত্যকাটিতে পোলিও ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া উচ্চ ঝুঁকির আশঙ্কার কথাও জানায় সংস্থাটি।
গাজা এবং পশ্চিম তীরের ডব্লিউএইচওর জরুরি স্বাস্থ্য সেবার একজন কর্মকর্তা আয়াদিল সাপারবেকভ সাংবাদিকদের এক সাক্ষাৎকারে বলেন, গাজায় বর্তমানে পোলিও ভাইরাস টাইপ-২ এর ভ্যাকসিন দেয়া বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এজন্য উপত্যকাটিতে এটি ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বেড়েছে।
গত শুক্রবার (২৬ জুলাই) পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থায় ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর গাজায় ১০ লাখের বেশি পোলিও টিকা পাঠানোর ঘোষণা দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। শিশুদের পোলিও ভাইরাস থেকে রক্ষা করার জন্য এসব টিকা দেয়া হবে। তবে যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে যথাযথভাবে টিকা কর্মসূচি নিশ্চিত করা সম্ভব না। তাই পোলিও প্রতিরোধে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানায় ডব্লিউএইচও।
পোলিও মাইলাইটিস নামের ভাইরাস যা প্রধানত মল-মুখের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এটি একটি অত্যন্ত সংক্রামক ভাইরাস যা স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করতে পারে এবং পক্ষাঘাত ঘটাতে পারে। ১৯৮৮ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী ৯৯ শতাংশ পোলিও হ্রাস পেয়েছে। গণটিকা প্রদান, প্রচার এবং বিশ্বব্যাপী তা নির্মূল করার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকায় এটি সম্ভব হয়েছে।
সাধারণত পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুরা সবচেয়ে বেশি পোলিও ভাইরাসের ঝুঁকির মধ্যে থাকে। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে আরোগ্য লাভের সুযোগ নেই। আক্রান্ত হওয়ার অনেক লক্ষণের মধ্যে গুরুতর লক্ষণ হলো জ্বর, শ্বাসকষ্ট শেষে পক্ষাঘাত বা পঙ্গুত্ব।