পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চালিয়ে ফেসবুকে লাইভ, দুর্ঘটনায় আইনজীবীর মৃত্যু

মোটরসাইকেল চালিয়ে পদ্মা সেতু পার হচ্ছিলেন দুই আইনজীবী বন্ধু। একজন ছিলেন ফেসবুকে লাইভে। লাইভ চলা অবস্থায় মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে একজন প্রাণ হারিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শরীয়তপুরের জাজিরায় পদ্মা সেতুর টোল প্লাজার পাশে সেতুর সংযোগ সড়কে এ ঘটনা ঘটেছে।

নিহত ব্যক্তির নাম ইনজামুল হক সুমন (৩৪)। তিনি শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জের চরভাগা ইউনিয়নের পূর্ব মৃধাকান্দি এলাকার বাসিন্দা। তিনি ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আইনজীবী ছিলেন। সেই সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের সদস্য ছিলেন। ঘটনার সময় ইনজামুল মোটরসাইকেলটি চালাচ্ছিলেন। এই দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেলটির আরেক আরোহী আতিক ইসলাম আহত হয়েছেন। তিনিও আইনজীবী। তাঁর বাড়ি ভেদরগঞ্জের কাচিকাটা এলাকায়। তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়েছে।

শরীয়তপুরের পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ শরিফুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ইনজামুল আজ দুপুরে মোটরসাইকেল নিয়ে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি ভেদরগঞ্জের সখিপুরে রওনা হন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বন্ধু আতিক ইসলাম। বেলা দুইটার দিকে দুই বন্ধু মোটরসাইকেল নিয়ে পদ্মা সেতুতে ওঠেন। ইনজামুল মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন, পেছনে বসে ফেসবুকে লাইভ করছিলেন আতিক। লাইভে ব্যস্ত থাকায় তাঁরা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন।

১২ মিনিট ২৫ সেকেন্ডের ওই লাইভ ভিডিওতে দেখা যায়, পদ্মা সেতুতে উঠেই লাইভ শুরু করেন আতিক। লাইভ শুরু হওয়ার ৬ মিনিটের সময় পদ্মা সেতু থেকে মোটরসাইকেলটি নিয়ে ওই দুই বন্ধু জাজিরা প্রান্তে নামেন। ৬ মিনিট ৭ সেকেন্ডের মাথায় মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সংযোগ সড়কের রেলিংয়ে ধাক্কা লাগে। তখন ওই দুজন ছিটকে পড়েন। এতে মোটরসাইকেলচালক ইনজামুল হক মাথায় গুরুতর আঘাত পান। দুর্ঘটনার পরও ফেসবুক লাইভটি চলছিল। লাইভ ভিডিওর শেষ অংশে দেখা যায়, দুর্ঘটনা দেখে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে তাঁদের উদ্ধার করেন। আহত দুজনকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর চিকিৎসক ইনজামুলকে মৃত ঘোষণা করেন। আতিককে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

See also  সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হক গ্রেপ্তার

এদিকে সদ্য বিদায়ী আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে গ্রেপ্তারের পর গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকার সিএমএম আদালতে তোলা হলে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের যে হট্টগোল হয়, সেখানে ইনজামুল হক সুমনকে নেতৃত্ব দিতে দেখা যায়। আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানকে আদালতে আনার খবর জানার পর গতকাল সকাল থেকেই ওই আইনজীবীরা পচা ডিম হাতে সিএমএম আদালতের সামনে অবস্থান নেন। আইনজীবী ইনজামুল হক সুমনকে ডিম হাতে একটি গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেন। তিনি ওই গণমাধ্যমকে বলেন, তাঁরা ১৮ কোটি জনগণের পক্ষে পচা ডিম হাতে আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানকে অভ্যর্থনা জানাতে জড়ো হয়েছেন। এই ডিমগুলো পরিবেশ-পরিস্থিতি অনুযায়ী হাতে থাকবে, না কি কারও মাথায় যাবে, সেটা সময়ই বলে দেবে বলে তখন জানান ইনজামুল।

সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানকে আদালতের হাজতখানায় আনা হয়। এ সময় বিপুলসংখ্যক পুলিশ তাঁদের ঘিরে রাখে। পরে পুলিশ সদস্যরা যখন আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানকে আদালতের সামনে দিয়ে হাজতখানায় নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন একদল আইনজীবী তাঁদের লক্ষ্য করে ডিম ও জুতা নিক্ষেপ করতে থাকেন। কয়েকটা ডিম আনিসুল হকের হেলমেটেও লাগে।