রাজশাহীর পুঠিয়ায় অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নন্দনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান, প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগষ্ট) সকাল ১০ টার সময় ওই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
এসময় মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেয় উক্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকরা।
নন্দনপুর উচ্চ বিদ্যালয় বর্তমান ও প্রাক্তন বেশ কয়েকজন ছাত্রছাত্রী তারা বলেন, প্রধান শিক্ষক স্যার আমাদেরকে ফেল করিয়ে প্রতি সাবজেক্টে ১ হাজার টাকা করে জোরপূর্বক নিতেন। টাকা না দিলে পরীক্ষা দিতে দিবে না বলে হুমকিও দিতেন। ঠিকমত ক্লাসে আসেন না। আইসিটি ক্লাস না করিয়ে আড়াইশো টাকা করে নিতেন।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া সহকারী শিক্ষক মোজাম্মেল হক বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনোয়ার হোসেন (মিম) আমাদের সবাইকে খুব চাপে রাখে। অতিরিক্ত কাজ করিয়ে নেয়। তার মনোনীত ব্যক্তিদের নিয়ে আড্ডা বাজি করে। নিয়মিত আসেও না।
সহকারী শিক্ষক নজরুল ইসলাম সহ একাধিক শিক্ষক শিক্ষিকা বলেন, মুরাদ নামের আরেক জন শিক্ষককে নিয়ে বেশিরভাগ সময় বাইরে থাকে, নিয়মিত আসে না, আমাদেরকে গুরুত্বও দেয় না। এমনকি স্কুলের কোনো হিসাব দেয় না। যা খুশি তাই করেন। আমাদের প্রকৃত যে ন্যায্য পাওনা সেটা কখনোই আমাদেরকে দেয় না।
একই বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আফরোজ হোসেন (ছুম্মা) এর স্ত্রী মাহবুবা আক্তার রুবি কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমার স্বামী বহুবচন এই স্কুলে সুনামের সাথে চাকরি করেছে। অথচ ওরা আমার স্বামীকে নির্যাতন করে বের করে দিয়েছে। এই বিষয়ে আমাদের কাছে দুটি মামলার রায় রয়েছে তবুও তারা আমার স্বামীকে স্কুলে ঢুকতে দেয়নি। এই টেনশনে আমার স্বামী অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। আমি এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক আলহাজ্ব আনোয়ারুল ইসলাম (জুম্মা) সাবেক পুঠিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তিনি বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম-দুর্নীতির বহু ঘটনা রয়েছে কয়টি ঘটনা আপনাদেরকে বলবো। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনোয়ার হোসেন মিম তিনি স্থানীয় শরিফ কাজির সাথে লিয়াজও করে প্রতিষ্ঠানে চরম অনিয়ম আর দুর্নীতি করেছে। এমনকি ফরম ফিলাপের টাকা ছাড়াও স্কুলের টেস্ট পরীক্ষায় ছাত্রদের ফেল করিয়ে প্রতিটি সাবজেক্টে অতিরিক্ত ১ হাজার টাকা করে জোরপূর্বক নেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটিতে কোন পত্রিকায় বিজ্ঞাপন না দিয়েও নিয়োগ দেয়া হয় কর্মচারী। বিদ্যালয়ের মার্কেট একজনের কাছে টাকা নিয়ে অন্য জনের কাছেও দেওয়া হয় ভাড়া। ভারপ্রাপ্ত ওই প্রধান শিক্ষক অভিজ্ঞতা ছাড়াই পেয়েছেন দায়িত্ব। মুরাদ নামের আরেকজন তার এসএসসি পরীক্ষায় ১. ৮০ পয়েন্ট রয়েছে। অর্থাৎ যোগ্যতা ছাড়াই শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষক হয়ে বসে আছে। এছাড়াও সারাদিন বলে ওই প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতির কথা শেষ হবে না।