বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় দোকান কর্মচারী শাহজাহান আলী (২৪) হত্যা মামলায় গ্রেফতার সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেছে পুলিশ।
জিয়াউল আহসানকে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক (ডিজি) থাকাকালীন তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়
শুক্রবার (১৬ আহস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাতুল রাকিবের আদালতে তার উপস্থিতিতে এ রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হবে । রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) দিনগত রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে বুধবার (১৪ আগস্ট) এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।
গত ১৬ জুলাই কোটাবিরোধী আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় পাপোশের দোকানের কর্মচারী শাহজাহান আলীকে হত্যার অভিযোগে তার মা আয়শা বেগম (৪৫) একটি মামলা করেন। মামলায় আসামি করা হয় অজ্ঞাতপরিচয়।
এ মামলার অভিযোগে আয়শা বেগম বলেন, আমার ছেলে শাহজাহান আলী নিউমার্কেট থানার মিরপুর রোডের বলাকা সিনেমা হলের গলির মুখে পাপোশের দোকানে কাজ করতো। প্রতিদিনের মতো ১৬ জুলাই সকাল ৯টার দিকে দোকানে কাজ করার জন্য যায়।
ওইদিন সন্ধ্যায় অজ্ঞাতপরিচয় একজন ব্যক্তি ছেলের মোবাইল ফোন নম্বর থেকে আমার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল করে জানায়, শাহজাহান গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ধানমন্ডি পপুলার হাসপাতালে ভর্তি। আমি সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক পপুলার হাসপাতালে যাই এবং জানতে পারি, আমার ছেলেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আমি তাৎক্ষণিক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাই এবং মর্গে গিয়ে ছেলের মরদেহ শনাক্ত করি।
তখন বিভিন্ন ব্যক্তির মাধ্যমে জানতে পারি, গত ১৬ জুলাই আমার ছেলে অজ্ঞাতপরিচয় কোটাবিরোধীদের কর্তৃক গুরুতর রক্তাক্ত জখমপ্রাপ্ত হয়ে নিউমার্কেট থানাধীন মিরপুর রোডের টিটি কলেজের বিপরীত পাশে কাদের আর্কেড মার্কেটের সামনে পাকা রাস্তার ওপর পড়ে ছিল।
মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, অজ্ঞাতপরিচয় আসামিরা আমার ছেলের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি আঘাত করে; ফলে আমার ছেলে রক্তাক্ত জখমপ্রাপ্ত হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকে। উপস্থিত পথচারীরা তাকে চিকিৎসার জন্য দ্রুত ধানমন্ডির পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। ছেলের অবস্থা খারাপ দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
মামলার বাদী আরও বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার ছেলেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গত ১৬ জুলাই সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টা ৫ মিনিটের দিকে মৃত ঘোষণা করেন।