মিয়ানমারে জাতিগত বিদ্রোহীদের সঙ্গে জান্তা বাহিনীর সংঘর্ষের বলি হয়ে রাখাইনে প্রাণ যাচ্ছে রোহিঙ্গাদের। এতে আশপাশের দেশগুলোতে আবারও নামতে পারে আশ্রয়প্রার্থীদের ঢল। বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থান নেয়া অর্ধশতাধিক রোহিঙ্গাকে চিকিৎসা দেয়ার দাবি করেছে দাতব্য সংস্থা চ্যারেটি মেডিসিন সানস ফ্রন্টিয়ারস। তবে নতুন করে কাউকে আশ্রয় দেয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা।
থেমে থেমে মর্টারশেল আর বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে উঠছে রাখাইনের মংডু শহর। অঞ্চলটিতে আরাকান আর্মির সঙ্গে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে জান্তা বাহিনীর। দু’পক্ষের আগ্রাসনের বলি হয়ে প্রাণ যাচ্ছে স্থানীয় রোহিঙ্গাদের।
মাথা গোজার ঠাঁই হারিয়ে নাফ নদী পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয়ের চেষ্টা করছেন কেউ কেউ। আবার কাঠের নৌকায় সমুদ্র পাড়ি দিতে গিয়েও ঘটছে প্রাণহানি।
স্থানীয় এক রোহিঙ্গা বলেন, চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলে এলাকাগুলোতে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে আরাকান আর্মি। বাঁচার জন্য শহরের দিকে গিয়ে দেখি সেখানেও খারাপ অবস্থা। পরে সাঁতরে সমুদ্র পাড়ি দিতে বাধ্য হই।
এদিকে সীমান্তে অবস্থান নেয়া অনেকেই গুরুতর আহত। দাতব্য সংস্থা চ্যারেটি মেডিসিন সানস ফ্রন্টিয়ারসের দাবি, অন্তত ৫৪ জনকে চিকিৎসা দিয়েছেন তারা। যাদের ৪০ শতাংশই নারী ও শিশু।
তবে নতুন করে কোনো রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ঠাঁই দেয়া সম্ভব নয় বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। আরাকান আর্মিকে চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
তৌহিদ হোসেন বলেন, আমরা আর কোনো রোহিঙ্গাকে ঢুকতে দেয়ার মতো অবস্থায় নেই। আমরা আমাদের সাধ্যের চাইতে বেশি করেছি। বিশ্ব সম্প্রদায়ের উচিত আরাকান আর্মিকে চাপ প্রয়োগ করা।
গেল সপ্তাহে মংডুতে ড্রোন হামলায় গর্ভবতী নারীসহ প্রাণ গেছে কয়েকজনের। হতাহতের পর এসব হামলার জন্য একে অপরকে দায়ী করেছে আরাকান আর্মি ও জান্তা বাহিনী। আর স্থানীয়দের অভিযোগ, জোরপূর্বক আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করছে সেনাবাহিনী।