ছাত্র আন্দোলনে যতটা প্রশংসনীয় হয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ততটা নিন্দনীয় হয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশ।
বাংলাদেশের বৈপ্লবিক পরিবর্তনের পর যারা দেশের বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে পেশা বিবেচনায় সবচেয়ে বেশি সদস্য ছিল পুলিশের।
গত পাঁচই অগাস্টের পর কমপক্ষে ৫১৫ জন পুলিশ সদস্য দেশের বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন, যাদের মধ্যে অন্তত ২৮ জন ছিলেন কর্মকর্তা পর্যায়ের।
গত জুলাই ২০২৪ এ শুরু হওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সর্বোচ্চ ধৈর্য, বিচক্ষণতা এবং মানবতার পরিচয় দিয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
সম্প্রতি ফেসবুকে একটি ঘটনা ভাইরাল হয়েছে যেখানে ফারজানা সিথি নামের এক
তরুনী সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন আশিকের সাথে প্রচন্ড উচ্চবাক্য করেন এবং অশোভ আচরণ করেন।
ঐ তরুনীর অশোভন আচরণ ও বাগবিতণ্ডার পরেও অত্যন্ত বিচক্ষণতা ও ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন ওই সেনা কর্মকর্তা
পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার মুখে শেষ পর্যন্ত ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন ফারজানা সিথি।
অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে পুলিশের প্রতি মানুষের ক্ষোভ বেড়েই চলেছে।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন চলাকালীন বিক্ষোভের সময় গত ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে প্রতিবাদমুখর নিরস্ত্র আবু সাঈদকে পুলিশ গুলি করে। সহপাঠীরা সাঈদকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
সাঈদের হত্যাকাণ্ড সারা দেশে ক্ষোভের সৃষ্টি করে, নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
এছাড়া গত ৩১ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে ঢাকার নিউ মডেল ডিগ্রী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদুল ইসলামের মুখ চেপে ধরেন পরিদর্শক আরশাদ হোসেন। তার এমন অপেশাদার কর্মকাণ্ডের ফলে পুলিশের কার্যক্রম নিয়ে জনগণের বিরূপ ধারণা সৃষ্টিসহ পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। যার প্রেক্ষিতে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
পুলিশের এ ধরণের কার্যকলাপে পুলিশের উপর মানুষের আস্থা অনেকটাই নড়বড়ে হয়ে যায়। যেখানে পুলিশের কাছে জনগণ আশ্রয় খুঁজে, সে জায়গায় এবার আশ্রয় নিয়েছে সেনাবাহিনীর কাছে।
অবশ্য এ আন্দোলনে নানান সময় পুলিশেরাও ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন।
সব পুলিশ এক হয় না। পুলিশ বাহিনী নিজের জীবন বাজি রেখে এমনকি নিজের জীবনের বিনিময়ে জনগণের জান মালের হেফাজত করে যাচ্ছে বলে অনেকে মত প্রকাশ করেন।