লিটন হোসাইন জিহাদ, ঢাকা: ১৯ আগস্ট ২০২৪ থেকে ভারত থেকে নেমে আসা পানিও ভারি বৃষ্টিপাতের কারনে বাংলাদেশে আকস্মিক বন্যার (flood in Bangladesh) প্রকোপে দেশব্যাপী ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। সরকারী পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বন্যার ফলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অন্তত ৮০০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং লাখ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বাংলাদেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের জেলাগুলি সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে। বিশেষ করে ফেনী,কুমিল্লা,নোয়াখালী,হবিগঞ্জ বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, নাটোর, ও পঞ্চগড়,ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বন্যার কারণে ভয়াবহ ক্ষতির শিকার হয়েছে। বৃষ্টির কারণে নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে, যা সেচব্যবস্থা ও যোগাযোগব্যবস্থাকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
সরকারের তথ্য অনুযায়ী, অন্তত ৩২ লাখ একর জমির ফসল ডুবে গেছে এবং ১৫ হাজারেরও বেশি বাড়ি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। এছাড়া, মূল সড়ক ও ব্রিজগুলিরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, যা পরিবহন ও ত্রাণ সরবরাহে চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে।বন্যার কারণে হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। বাস্তুচ্যুতদের মধ্যে বেশিরভাগই জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সংকটের শিকার হয়েছে, এবং তারা খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, ও স্বাস্থ্যসেবার অভাবে দুর্ভোগের সম্মুখীন।flood in Bangladesh
আপনি কী সাংবাদিক, মুক্ত সাংবাদিকতায় যুক্ত হতে পথিকটিভিতে একাউন্ট করুন
রাজশাহী জেলার বন্যা কবলিত অঞ্চলের বাসিন্দা মাহফুজুর রহমান বলেন, “আমাদের ঘরবাড়ি, কৃষি জমি সবকিছুই পানির নিচে। এখন আমাদের হাতে কোনো উপায় নেই, কেবলমাত্র সাহায্যের অপেক্ষায় আছি।”সরকার ত্রাণ কার্যক্রমে দ্রুততা আনতে সেনাবাহিনী, রেডক্রিসেন্ট ও অন্যান্য সাহায্য সংস্থার সাহায্য নিয়েছে। ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ, স্বাস্থ্য ক্যাম্প স্থাপন, এবং জরুরি সেবা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু হয়েছে।খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হাসানুজ্জামান খান বলেন, “আমরা ত্রাণ কার্যক্রম দ্রুততার সাথে চালিয়ে যাচ্ছি এবং আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।”flood in Bangladesh
বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করছেন, বন্যার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পুনরুদ্ধার করতে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা দরকার। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় এবং বন্যার ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেতে সরকারকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. মেহেদী হাসান বলেন, “বাংলাদেশে বন্যা প্রতিরোধে আরও উন্নত সেচ ব্যবস্থা ও বন্যা প্রতিরোধী অবকাঠামো নির্মাণ প্রয়োজন। তাছাড়া, জনগণকে সচেতন করার জন্য প্রশিক্ষণ ও তথ্য প্রচারণা বৃদ্ধি করতে হবে।”flood in Bangladesh
বন্যার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দুর্দশা ও সরকারের ত্রাণ কার্যক্রমের মধ্যে অনেক কিছুই এখনো অমীমাংসিত। একদিকে মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তা, অপরদিকে বন্যার প্রতিকূলতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে সরকারের চলমান প্রচেষ্টা প্রমাণ করে যে, এই দুর্দিনে দেশের সকল স্তরের মানুষের একসাথে কাজ করার সময় এসেছে।flood in Bangladesh
Sassy_Social_Share