লিটন হোসাইন জিহাদ,ব্রাহ্মণবাড়িয়া: বাংলাদেশে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে দেশের রাজনীতি এবং সমাজব্যবস্থা যেন এক ভয়াবহ অনিশ্চয়তার দিকে ধাবিত হচ্ছে। গণঅভ্যুত্থানের উত্তাল ঢেউ পার হওয়ার পর, এক অস্থিরতা এবং বিভ্রান্তির মেঘ ঘনীভূত হয়েছে। সরকারের এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের বিভিন্ন অংশে আইনশৃঙ্খলার প্রতি অবজ্ঞা, ন্যায়বিচারের অভাব এবং নৈতিকতার সংকট দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গ্রেপ্তার বেড়ে চলেছে, যা আইন ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা ধ্বংস করে দিচ্ছে।
মাজার ও মন্দিরের মতো ধর্মীয় স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা ঘটছে, যা কেবলমাত্র একটি গোষ্ঠীকে নয়, গোটা দেশের ধর্মীয় সহিষ্ণুতা এবং সাংস্কৃতিক ঐক্যকে আঘাত করছে। বহুকাল ধরে বাংলাদেশের বুকে লালিত সম্প্রীতির চেতনাকে যেন কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে ভাঙার চেষ্টা করছে।
আরও ভয়ঙ্কর ব্যাপার হলো, সামান্য ব্যক্তিগত বিরোধ বা রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের জের ধরে একদল মানুষ অন্য গোষ্ঠীর ওপর হামলা চালাচ্ছে, যা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দাঙ্গার মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এসব সংঘর্ষের পেছনে কারা আছে, কে নেতৃত্ব দিচ্ছে—এ প্রশ্নগুলো উত্তরহীন রয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্র যেন কোনোভাবে এই সহিংসতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে অক্ষম অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে তা উপেক্ষা করছে।
অপরদিকে, যেসব মানুষ এই সহিংসতা এবং অরাজকতার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে চেয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে অযাচিত মামলা করে ফাঁসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিরোধী মতের কণ্ঠগুলোকে চাপা দেওয়ার জন্য প্রশাসন যেন সব ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে। এর ফলে দেশের রাজনৈতিক এবং সামাজিক অবস্থা ভয়ঙ্করভাবে নাজুক হয়ে উঠেছে।
এই সমস্ত ঘটনা দেশকে ধীরে ধীরে একটি অনিবার্য গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। জনমানসে আতঙ্ক এবং অবিশ্বাসের বীজ রোপণ করছে, যেখানে কেউ কারও ওপর আস্থা রাখতে পারছে না। সমাজের এই ভাঙন এবং অস্থিরতার মধ্যেই দেশের ভবিষ্যৎ ক্রমশ অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে।