ঢাকা জেলা থেকে রেজিস্ট্রেশন পাওয়া সিএনজি অটোরিকশাগুলো (ঢাকা-থ) ঢাকা মেট্রো এলাকায় চালানোসহ ৩ দফা দাবি জানিয়েছে ঢাকা জেলা সিএনজি অটোরিকশা মালিক/শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটি। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মালিক শ্রমিক সমাবেশ থেকে এসব দাবি জানানো হয়।
সোসাইটির দাবিগুলো হচ্ছে— মহানগরীর চালকরা যেন বৈষম্যমুক্তভাবে বিনা বাধায় ঢাকা মেট্রো-থ গাড়ির মতো ঢাকা-থ গাড়ি মহানগরের রাস্তা ব্যবহার করতে পারেন। মহানগরীতে চলাচলের আবেদনটি চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীতে চলাচল করা ঢাকা-থ গাড়িগুলো ট্রাফিক সার্জেন্টকে রেকারিং, ডাম্পিং, রোড পারমিটের মামলা না করার জন্য নির্দেশ দেওয়া। এছাড়া ঢাকা জেলার ওপর দিয়ে যেসব হাইওয়ে রাস্তা আছে, সেসব রাস্তায় অথবা হাইওয়ের পাশ দিয়ে বাই লেন তৈরি করে সিএনজি অটোরিকশাসহ ধীরগতির বাহন চলাচলের ব্যবস্থা করা।
সমাবেশে সোসাইটির সভাপতি মো. জুয়েল মালতীয়া বলেন, ২০০২ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকার ঢাকা মহানগর থেকে বায়ু দূষণ দূর করতে ৩৬ হাজার বেবিট্যাক্সি উচ্ছেদ করে মাত্র সাড়ে ১৩ হাজার সিএনজি অটোরিকশা (ঢাকা মেট্রো-থ) প্রদান করায় এই সেক্টরে অনেক চালক বেকার হয়ে পড়ে। পরে আরও গাড়ি দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। সরকার নির্ধারিত জমার চেয়ে মালিকদের জমা বেশি দিতে হয় এবং প্রতিনিয়ত নানা নির্যাতন সইতে হয়। গত ২৫ বছরে উল্লেখযোগ্য নতুন গাড়ি অনুমোদন না দেওয়ায় ‘ঢাকা মেট্রো-থ’ গাড়ির মালিকরা একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে এই সেক্টরকে বিশৃঙ্খল করেছে।
ঢাকা জেলার সিএনজি অটোরিকশা মেট্রো এলাকায় চালাতে চান চালকরা
তিনি বলেন, বর্তমান মহানগরীতে প্রায় ২ কোটি লোকের বসবাস। লোকের তুলনায় ১৫ হাজার গাড়ি নিতান্তই কম। ফলে গাড়ির স্বল্পতায় বেকার এবং নানা নির্যাতিত চালকদের মধ্যে একাংশ ঢাকা জেলায় চলাচলের অনুমোদন প্রাপ্ত (ঢাকা-থ) গাড়ি ধার/দেনা অতি সুদে লোন, সোনা-গয়না বিক্রি করে ক্রয় করে নিজের গাড়ি নিজে চালিয়ে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। কিন্তু ‘ঢাকা-থ’ সিএনজি অটোরিকশাগুলো জেলার মধ্যে নানা কারণে চলাচল করতে অনেক সমস্যায় পড়ছে।
ঢাকা জেলার মধ্যে মহানগরটি অবস্থান করায় জেলাটি কয়েকটিভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। জেলার এক স্থান হতে অন্যস্থানে যেতে হলে মহানগরের সড়ক ব্যবহার করতে হয় বলে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। জেলার উপর দিয়ে বুড়িগঙ্গা, বংশী, তুরাগ, ধলেশ্বরী, বালু নদী ও হাওর বিলের কারণে জেলা বিভক্ত হয়ে পড়েছে। জেলার উপর দিয়ে কয়েকটি মহাসড়ক হওয়ায় ও ওইসব মহাসড়কে এবং বেড়িবাঁধে, ক্যান্টনমেন্টে ইত্যাদি যায়গায় ঢাকা-থ গাড়ি চালাতে না দেওয়ায় এলাকা বিভক্ত এবং সংকুচিত হয়েছে।
২০১৭ সালে ঢাকা জেলা থেকে মহানগরীর আশেপাশের ১৬টি ইউনিয়ন কেটে নিয়ে ২৬টি নতুন ওয়ার্ড গঠন করা হয়। এতে ঢাকা মহানগর ১২৯ বর্গ কিলোমিটার থেকে নতুন ১৪১ বর্গ কিলোমিটার যোগ হয়ে বর্তমানে মোট ২৭০ বর্গ কিলোমিটার আয়তন হয়েছে। যার কারণে জেলা আরও সংকুচিত হয়েছে। আমরা এই বৈষম্য থেকে মুক্তি চাই। এসময় উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা জেলা সিএনজি অটোরিকশা মালিক/শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেনসহ আড়াই শতাধিক সিএনজি অটোরিকশা চালক।