২৯শে সেপ্টেম্বর রোজ রবিবার সকাল ১১ ঘঠিকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সামনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা নাগরিক ফোরামের আয়োজনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে অংশগ্রহণকারী সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ব্যক্তিরা আন্তঃনগর বিজয় ও কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনের ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে যাত্রাবিরতি পুনঃপ্রতিষ্ঠা, ঢাকা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া-ঢাকা রুটে নতুন ট্রেন সার্ভিস চালু করা, এবং শহরের বিদ্যুৎ ও যানজট সমস্যার সমাধানের দাবিতে মুখরিত হয়ে ওঠে।
মানববন্ধনকারীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে আন্তঃনগর বিজয় ও কালনী এক্সপ্রেসের যাত্রাবিরতি পুনরায় চালু করার দাবি জোরালোভাবে তুলে ধরেন। বক্তারা বলেন, “বিজয় ও কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাবিরতি বন্ধ হওয়ায় এই এলাকার সাধারণ মানুষ বিশেষ করে কর্মজীবী, শিক্ষার্থী এবং ব্যবসায়ীদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে অসহনীয় কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে। স্টেশনে এই ট্রেনগুলোর যাত্রাবিরতি পুনঃপ্রতিষ্ঠা না হলে মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠবে।”
তারা আরও উল্লেখ করেন যে, বর্তমানে ঢাকা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া-ঢাকা রুটে যাত্রীর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে, কিন্তু যাতায়াতের সুবিধা সে অনুযায়ী বৃদ্ধি পাচ্ছে না। তাই এই রুটে নতুন একটি আন্তঃনগর ট্রেন সার্ভিস চালু করা এখন সময়ের প্রয়োজন। বক্তারা বলেন, “নতুন ট্রেন সার্ভিস চালু হলে যাত্রীরা সহজেই এবং সাশ্রয়ী মূল্যে ঢাকায় যাতায়াত করতে পারবে, যা এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সহায়ক হবে।”
এছাড়াও, মানববন্ধনে বক্তারা শহরের বিদ্যুৎ ও যানজট সমস্যার তীব্র সমালোচনা করেন। বক্তারা বলেন, “ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের বিদ্যুৎ সরবরাহ বর্তমানে অত্যন্ত বিপর্যস্ত। ঘনঘন লোডশেডিংয়ের ফলে শহরের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী পর্যন্ত সবাই অসহনীয় অবস্থায় রয়েছে। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে এবং ব্যবসায়ীদের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ উন্নত না হলে এর ফলে শহরের অর্থনীতি ও শিক্ষাক্ষেত্রে ভয়াবহ প্রভাব পড়বে।”
যানজট সমস্যাও মানববন্ধনের একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয় ছিল। এই বিষয়ে বক্তারা বলেন, “ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের সড়ক ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত অপর্যাপ্ত হয়ে উঠেছে। যানজটের কারণে প্রতিদিন সাধারণ মানুষকে সময় ও অর্থের অপচয় করতে হচ্ছে। শহরের প্রধান সড়কগুলোতে যান চলাচলের স্বাভাবিকতা নিশ্চিত করতে সুষ্ঠু সড়ক ব্যবস্থাপনা এবং ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন।”
মানববন্ধনে বক্তারা অবিলম্বে এই দাবি পূরণে যথাযথ কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। তারা আরও বলেন, “ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরকে একটি আধুনিক, উন্নত এবং সুশৃঙ্খল শহর হিসেবে গড়ে তুলতে হলে এই সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে। আমরা আশা করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমাদের দাবি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।”
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা এসব দাবির দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেন। তারা বলেন, “আমাদের দাবি যদি উপেক্ষিত হয়, তবে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।”
এতে উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা নাগরিক ফোরামের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এবং শহরের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।