মনির হোসেন : গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কাজ ফেলে চলে গেছেন ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ফলে উন্নয়ন প্রকল্পটি এখন মানুষের চরম দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত বিদ্যমান সড়কটি ৪ লেনের জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতকরণে ৫,৭৯১ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্প কাজ স্থবির হয়ে পড়েছে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কাজ ফেলে চলে গেছেন ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এ অবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কটির অন্তত ৪ কিলোমিটার অংশে পিচ উঠে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। ফলে উন্নয়ন প্রকল্পটি এখন মানুষের চরম দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে প্রকল্পের অধীনে থাকায় সড়কটিতে নিয়মিত সংস্কার কাজও করতে পারেনি সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এ মহাসড়ক দিয়েই ব্রাহ্মণবাড়িয়া-ঢাকা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও সিলেট-চট্টগ্রাম-সিলেট রুটের যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী গাড়িগুলো চলাচল করে। এ অবস্থায় সড়কটি যানবাহন চলাচলের উপযোগী করতে স্থানীয় প্রশাসন সাময়িকভাবে ইট দিয়ে গর্ত ভরাট করার ব্যবস্থা নিয়েছে।
৫,৭৯১ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প যেভাবে ভোগাচ্ছে মানুষকে
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম বলেন, “আশা করছি, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা শীঘ্রই ফিরে আসবেন, এবং প্রকল্পটি আবারও শুরু হবে। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে একটি চিঠি পাঠিয়েছে, এবং এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আশুগঞ্জ-আখাউড়া ৪ লেন জাতীয় মহাসড়ক প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মো. শামীম আহমেদ বলেন, “ঠিকাদার না থাকায় মহাসড়কের বেহাল অংশ সংস্কার করা যাচ্ছে না। তবে যেহেতু যান চলাচলে সমস্যা হচ্ছে, সেজন্য এটি সংস্কারে আপাতত সরকারের রাজস্ব খাত থেকে অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে এখনও হাইকমিশন থেকে অনাপত্তিপত্র দেওয়া হয়নি। ফলে প্রকল্পের কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। যেহেতু কাজ বিলম্বিত হয়েছে, সেজন্য প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে।”
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম ফাওজুল কবির খান বলেন, “আমরা প্রকল্পটি সম্পর্কে অবগত। আইনশৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে উদ্বেগের কারণে ভারতীয় নির্মাণ কোম্পানির কর্মকর্তারা বাংলাদেশ ছেড়েছেন। তবে, আমাদের সাথে তাদের যোগাযোগ আছে এবং আমরা তাদের নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছি। পূজার ছুটিতে এখন তারা ভারতে অবস্থান করছেন; ছুটির পরে প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।”
সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ করার সম্ভাবনার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা এ বিষয়টি পরে দেখবো। আপাতত আমাদের অগ্রাধিকার হলো, ফের কাজ শুরু।”