ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি : পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তাদের বরখাস্তের প্রতিবাদে ও ২ দফা দাবী আদায়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ও ব্ল্যাক আউট কর্মসূচি পালন করছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা কর্মচারীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে তারা এই কর্মসূচি শুরু করে। ব্ল্যাক আউটের কারণে জেলার ৫টি উপজেলার প্রায় ৫ লক্ষ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সাথে অভিন্ন সার্ভিস কোড ও অনিয়মিত কর্মচারীদের চাকুরী নিয়মিত করণের ২ দফা দাবিতে দেশের ৮০ টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ৪০ হাজার কর্মকর্তা কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন।
তবে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড কোন দাবি পূরণ না করে বরং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মোঃ মকবুল হোসেন ও নবীনগরের ডিজিএম আসাদুজ্জামানসহ সারা দেশের প্রায় ২০ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে। বরখাস্তকৃত অন্য কর্মকর্তারা হলেন এজিএম রাজন কুমার দাস, ডিজিএম দিপক কুমার সিংহ, এজিএম মনির হোসেন, জুনিয়র জেনারেল ম্যানাজার মো. জাকির হোসেন, জিএম মো. হুমায়ুন কবির, ওয়ারিং পরিদর্শক আবু সালাম জাবেদ, ডিজিএম মো. রাহাত, এজিএম আবদুল হাকিম, জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার মো. হাসানুজ্জামান, জেনারেল ম্যানাজার মুশফিকুল ইসলাম, জিএম জুলফিকার, জিএম মো. আবুল হাসান, ডিজিএম মো. বেলাল হোসেন, ডিজিএম জাহিদুল ইসলাম, ডিজিএম আবদুল জলিল, এজিএম ইয়াসির আরাফাত ও ডিজিএম সামিউল কবির।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ও ব্ল্যাক আউট কর্মসূচি
এরই প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীরা ব্ল্যাকআউটসহ কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করছেন। আন্দোলনকারীরা জানান, বরখাস্তকৃত কর্মকর্তাদের স্বপদে পুনর্বহালের আগ পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে। এদিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় স্থানীয় গ্রাহকদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। ক্ষুদ্ধ গ্রাহকরা পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির প্রধান ফটকে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে আলোচনার মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করার চেষ্টা করলেও আন্দোলনকারীরা বরখাস্তকৃত কর্মকর্তাদের পুনর্বহালের আগ পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নাসিরনগর আঞ্চালিক কার্যালয়ের সহকারী জেনারেল ম্যানাজার মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ১৪ কোটি গ্রাহককে বিদ্যুৎ বিতরন করছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। বিদ্যুতায়ন বোর্ড পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে যাবাতীয় মালামাল ক্রয় করে দেয়। এগুলির বেশীর ভাগই নিম্নমানের হয়। এতে তারা বিপুল পরিমান দুর্ণীতি করে থাকে। পল্লীবিদ্যুৎ ও বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও চাকুরী বৈষম্য দুর করতে এ আন্দোলন। আগেও বিদ্যুৎ বিতরন কার্যক্রম চলমান রেখেই আন্দোলন করেছি। তারপরও আমাদের ২০জন কর্মকর্তাকে চাকুরীচ্যুত করেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানজার মো. মুকবুল হোসেনকে চাকুরীচ্যুত করায় অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়েছেন কসবা আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ- মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. মোস্তাফিকুর রহমানকে। তিনি বলেন, চাকুরীচ্যুতদের চাকুরীতে বহাল এবং দাবী আদায়ের জন্য পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কমপ্লিট শাট দিয়েছে। বেলা ১১টা থেকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বিদ্যুৎ আমদানী ও বিতরণ কার্যাক্রম বন্ধ করে রেখেছে। উল্লেখ্য, পল্লী বিদ্যুতের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা দুইটি, নাসিরনগর, নবীনগর, আখাউড়া উপজেলার ৫টি আঞ্চলিক কার্যালয় রয়েছে।