১৮৮৯ সালের ১৮ মে ইতালির সিসিলিতে জন্ম নেন ফ্র্যাঙ্ক লেন্তিনি, যিনি পরবর্তীতে সার্কাস দুনিয়ায় পরিচিতি পান ‘দ্য গ্রেট লেন্তিনি’ নামে। ১২ ভাইবোনের মধ্যে পঞ্চম এই শিশুটি জন্ম থেকেই ছিলেন এক ভিন্ন চমক। তাঁর শরীরে ছিল তিনটি পা ও দুটি যৌনাঙ্গ। তবে তৃতীয় পা তাঁর শরীরের অংশমাত্র; সেটি হাঁটার কাজে ব্যবহার করা যেত না।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ফ্র্যাঙ্ক তাঁর শারীরিক ব্যতিক্রমকেই জীবনের মূলধন বানান। ইতালির ছোট্ট শহর থেকে উঠে এসে তিনি আমেরিকার নামকরা সার্কাসে যোগ দেন এবং নিজের অসাধারণ শারীরিক বৈচিত্র্যকে কেন্দ্র করে মনোমুগ্ধকর প্রদর্শনী শুরু করেন। তাঁর শো এতটাই জনপ্রিয় হয় যে, তাঁকে ‘দ্য কিং’ উপাধি দেওয়া হয়।
চল্লিশ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ফ্র্যাঙ্ক লেন্তিনি আমেরিকার বিভিন্ন শীর্ষ সার্কাস শিবিরে খেলাধুলা প্রদর্শন করে অসংখ্য দর্শকের মন জয় করেন।
ফ্র্যাঙ্ক লেন্তিনির জীবন যেমন কর্মজীবনে ছিল বর্ণময়, তেমনই তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও ছিল রঙিন। তিনি প্রথমে টেরেসা মারে নামে এক মহিলাকে বিয়ে করেন। তাঁদের চারটি সন্তান ছিল। তবে ১৯৩৫ সালে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। পরবর্তীতে তিনি হেলেন শুপের সঙ্গে লিভ-ইন সম্পর্কে বসবাস করেন।
১৯৬৬ সালের ২১ সেপ্টেম্বর ফুসফুসের সংক্রমণের কারণে ফ্র্যাঙ্ক লেন্তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর শরীরের অদ্ভুত গঠনের পেছনে ছিল ভ্রূণের বিরল অবস্থা কনজয়েনড টুইন। গর্ভে যমজ শিশুর একত্রিত হয়ে যাওয়ার ফলে সাধারণত এক ভ্রূণের মৃত্যু ঘটে। তবে ফ্র্যাঙ্কের ক্ষেত্রে, মৃত ভ্রূণের কিছু অংশ তাঁর শরীরে থেকে গিয়েছিল, যা তৃতীয় পা ও অতিরিক্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সৃষ্টি করে।
ফ্র্যাঙ্ক লেন্তিনির জীবনের এই অসাধারণ কাহিনি বহু বই ও সিনেমার অনুপ্রেরণা হয়ে আছে। তাঁর জীবন আমাদের শিখিয়েছে, শারীরিক সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করে কিভাবে জীবনকে মহিমান্বিত করা যায়।