ওজন কমাতে সকাল না বিকেল—কখন হাঁটা বেশি উপকারী? বিশেষজ্ঞদের মতামতে জানুন কার্যকর সময় ও স্বাস্থ্য উপকারিতা

ওজন কমানোর চেষ্টায় আছেন অনেকেই। কেউ জিমে গিয়ে ঘাম ঝরান, কেউ যোগব্যায়ামে ভরসা রাখেন। আবার অনেকে আছেন, যাদের কাছে সবচেয়ে সহজ ও স্বস্তির ব্যায়াম হলো হাঁটাহাঁটি। অফিসে টানা চেয়ারে বসে কাজের ফাঁকে একটু হাঁটা হোক বা রাতে খাওয়ার পর ছাদে কয়েক পাক ঘোরা; হাঁটার এই সহজ অভ্যাসই অনেকের ফিটনেস মন্ত্র।
চিকিৎসকরাও বলছেন, প্রতিদিন সময় না পেলেও অন্তত কিছুটা হাঁটাহাঁটি করার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। কিন্তু প্রশ্ন হলো, দ্রুত মেদ ঝরাতে কোন সময় হাঁটা বেশি ফলদায়ক, সকালে না বিকেলে?
চিকিৎসকদের একাংশ বলছেন, সকালে হাঁটার রয়েছে বাড়তি কিছু সুফল। ভোরের নির্মল বাতাসে হাঁটলে ফুসফুস পরিষ্কার থাকে, হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসে। সেইসঙ্গে হৃৎস্পন্দনের হারও থাকে স্বাভাবিক।
তাদের দাবি, সকালে হাঁটাহাঁটি করলে হজমশক্তি উন্নত হয়। ফলে গ্যাস, অম্বল বা হজমজনিত অস্বস্তি দূর হয়। আর হজম ঠিক থাকলে ওজনও নিয়ন্ত্রণে আসে। তা ছাড়া দিনের শুরুতে হাঁটলে শরীর ও মন দুই-ই সতেজ থাকে, কাজের উদ্যম বাড়ে। এমনকি অনিদ্রায় ভুগলেও সকালের দিকে হাঁটাহাঁটি উপকারী হতে পারে।
তবে বিশেষজ্ঞদের আরেকাংশের মতে, শীতকালে ভোরের দিকে হাঁটা সব সময় উপযুক্ত নয়। এই সময় বাতাসে ধুলাবালি, পোলেন আর দূষণের মাত্রা বেড়ে যায়, যা অ্যালার্জি বা শ্বাসকষ্টের রোগীদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই অনেকের পরামর্শ, রোদ উঠলে বা কিছুটা বেলা বাড়লে হাঁটা ভালো। তাতে সূর্যের হালকা উষ্ণতা পাওয়া যায়, শরীরও থাকে চনমনে।
অন্যদিকে, বিকেল বা সন্ধ্যার হাঁটারও আছে নিজস্ব উপকারিতা। সারাদিনের ব্যস্ততা শেষে হাঁটাহাঁটি মানসিক চাপ কমায়, মনকে শান্ত করে। ক্লান্ত শরীরে আসে নতুন উদ্যম। রোদ না থাকায় দীর্ঘ সময় হাঁটলেও ক্লান্তি কম হয়। অনেকের অভিজ্ঞতা বলছে, বিকেল বা রাতে নিয়মিত হাঁটলে ঘুম ভালো হয়, আর ধীরে ধীরে শরীরের বাড়তি চর্বিও গলে যায়।
তাহলে ওজন কমাতে আদর্শ সময় কোনটি, সকাল নাকি সন্ধ্যা? গবেষকরা বলছেন, এর কোনো নির্দিষ্ট উত্তর নেই। দিনে যে সময়টায় হাঁটতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, সেটাই আপনার জন্য সেরা সময়। মূল বিষয় হলো ‘হাঁটা’, সময়ের হিসাব নয়। নিয়মিত হাঁটলে শরীরচর্চার সুফল পাওয়া যায়ই, সেটা সকাল হোক বা বিকেল।
তাই বিশেজ্ঞদের পরামর্শ, সময় নিয়ে দ্বিধায় না পড়ে আজ থেকেই হাঁটা শুরু করুন। নিয়মিত হাঁটতে থাকলেই মেদ ঝরবে, শরীরও থাকবে চাঙা।

Responses